ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝ? কয় প্রকার ও কী কী?
ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া হল সেই সমস্ত প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়া যা ভূপৃষ্ঠের অর্থাৎ পৃথিবীর বহিরঙ্গের পরিবর্তন ও বিবর্তন ঘটায়। ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়াগুলিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:-
[১] অন্তর্জাত প্রক্রিয়া: ভূ-অভ্যন্তরের শক্তির প্রভাবে যেসব প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন ঘটায়, তাদের অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলে। অন্তর্জাত প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে:-
- ভূ-আলোড়ন: ভূ-অভ্যন্তরের শক্তির প্রভাবে ভূত্বকের উপরে ও নিচে উত্থান ও অবনমন ঘটে। একে ভূ-আলোড়ন বলে। ভূ-আলোড়নের ফলে পর্বত, মালভূমি, সমভূমি, উপত্যকা প্রভৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।
- ভূমিকম্প: ভূপৃষ্ঠের নিচে শিলাস্তরের অসম ভঙ্গুরতার কারণে ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের ফলে ভূপৃষ্ঠে ফাটল ধরে, ভূমি ধসে পড়ে, ভবন ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত: ভূপৃষ্ঠের নিচে গলিত শিলার ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসাকে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত বলে। আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে লাভা, ছাই, গ্যাস ইত্যাদি ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসে। এগুলি ভূমিরূপ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
[২] বহির্জাত প্রক্রিয়া: ভূপৃষ্ঠের উপরে অবস্থিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে যেসব প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন ঘটায়, তাদের বহির্জাত প্রক্রিয়া বলে। বহির্জাত প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে:-
- আবহবিকার: আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের (যেমন, বাতাস, জল, বরফ, তাপ ইত্যাদি) প্রভাবে শিলাস্তরের বিয়োজন ও ক্ষয়কে আবহবিকার বলে। আবহবিকারের ফলে শিলাস্তর চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় এবং ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটে।
- ক্ষয়: আবহবিকারজাত পদার্থের ভূপৃষ্ঠ থেকে অপসারণকে ক্ষয় বলে। ক্ষয়ের প্রধান কারণগুলি হল বায়ু, জল, বরফ ও সমুদ্র তরঙ্গ। ক্ষয়ের ফলে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটে।
- সঞ্চয়: ক্ষয়জাত পদার্থের ভূপৃষ্ঠের যেকোনো স্থানে সঞ্চয়কে সঞ্চয় বলে। সঞ্চয়ের ফলে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটে।